বিশ্বাস
ধৃতিপর্ণা সামন্ত
যখন তারা শেখালো
-“মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই।”
ঠিক তখনই মনে পড়লো,
মেদিনীপুরের সেই মিস্ত্রিটির কথা।
একা থাকাকালীন যে মানুষটি
আমার ঘরের দেওয়ালে
পেরেক বসাতে এসেছিল,
সে কিন্তু আমায় ‘মা’ বলে ডেকেছিল।
ছত্রিশ-সাঁইত্রিশ বছরের রোগা গড়নের মিস্ত্রি
তার ছোকরা সাকরেদের আমাকে নিয়ে রসিকতার জবাব দিয়েছিল
-“চুপ কর। ও আমার মেয়ের মতো।”
সেদিন নতুন করে বিশ্বাস করতে শিখেছিলাম।
যখন তারা শেখালো
-“মানুষকে বিশ্বাস কোরো না।”
ঠিক তখনই মনে পড়লো,
ক্লাস ইলেভেনে বাসস্ট্যাণ্ডে আলাপ হওয়া
‘নীলপুর’ বাসের সেই চালকটিকে!
মুখের বাঁ-পাশে কাটাচিহ্ন আঁকা লোকটা
আমায় ‘বোন’ সম্বোধন করে চারটে 'লিচু' কিনে দিয়েছিল।
আমি কিশোরীবেলার সারল্যে লুটোপুটি খেলে,
দাদার দেওয়া লিচু মহানন্দে খেয়েছিলাম।
সে গল্প শোনার পর অন্যরা বলেছিল
- “তোকে তো কিডন্যাপ করতে পারতো!”
এইভাবে খাবারে কিছু মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়, জানিস!"
সেই মানুষ সেদিন আমার বিশ্বাসের ভীত শক্তপোক্ত করেছিল।
তাই যখন তারা বলে
-“মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই।”
আমি বলি
-“ওরা যে আমাকে বিশ্বাস করতে শিখিয়ে দিয়েছে।”
© 2020 ধৃতিপর্ণা সামন্ত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন