ভোকাট্টা ব্লগজিন সংখ্যা ১৮

 

বিশ্বাস

           ধৃতিপর্ণা সামন্ত

যখন তারা শেখালো

-“মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই।”

ঠিক তখনই মনে পড়লো,

মেদিনীপুরের সেই মিস্ত্রিটির কথা।

একা থাকাকালীন যে মানুষটি

 আমার ঘরের দেওয়ালে পেরেক বসাতে এসেছিল,

সে কিন্তু আমায় ‘মা’ বলে ডেকেছিল।

ছত্রিশ-সাঁইত্রিশ বছরের রোগা গড়নের মিস্ত্রি

তার ছোকরা সাকরেদের আমাকে নিয়ে রসিকতার জবাব দিয়েছিল

-“চুপ কর। ও আমার মেয়ের মতো।”

সেদিন নতুন করে বিশ্বাস করতে শিখেছিলাম।

যখন তারা শেখালো

-“মানুষকে বিশ্বাস কোরো না।”

ঠিক তখনই মনে পড়লো,

ক্লাস ইলেভেনে বাসস্ট্যাণ্ডে আলাপ হওয়া

‘নীলপুর’ বাসের সেই চালকটিকে!

মুখের বাঁ-পাশে কাটাচিহ্ন আঁকা লোকটা

আমায় ‘বোন’ সম্বোধন করে চারটে 'লিচু' কিনে দিয়েছিল।

আমি কিশোরীবেলার সারল্যে লুটোপুটি খেলে,

দাদার দেওয়া লিচু মহানন্দে খেয়েছিলাম।

সে গল্প শোনার পর অন্যরা বলেছিল

- “তোকে তো কিডন্যাপ করতে পারতো!”

এইভাবে খাবারে কিছু মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়, জানিস!"

সেই মানুষ সেদিন আমার বিশ্বাসের ভীত শক্তপোক্ত করেছিল।

তাই যখন তারা বলে

-“মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই।”

আমি বলি

-“ওরা যে আমাকে বিশ্বাস করতে শিখিয়ে দিয়েছে।”

 

© 2020 ধৃতিপর্ণা সামন্ত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন